কঠোর লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারি

মুক্তিবাণী অনলাইন ডেস্ক :

করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আগামীকাল বুধবার থেকে নতুন বিধিনিষেধের প্রজ্ঞাপন জারি, নানাবিধ ছাড় দিয়ে আবারো বাংলাদেশে ১৪ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য চলাচলে নিয়ন্ত্রণে বিধি-নিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

সরকারি, বেসরকারি অফিস এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট এই সময়ে পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে শিল্প-কারখানা। এই সময়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তবে টিকা গ্রহণের প্রয়োজনে টিকার কার্ড দেখিয়ে বের হওয়া যাবে। এছাড়া ওষুধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনা, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন বা সৎকার- ইত্যাদি প্রয়োজনে বাইরে বের হওয়া যাবে।

কয়েকদিন ধরেই সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছিল একটি সর্বাত্মক লকডাউনের কথা। সেখানে বলা হচ্ছিল কোন শিল্প কারখানা খোলা রাখা হবে না এবার। কিন্তু গত রোববার পোশাক শিল্পের মালিক সংগঠনগুলো দাবি জানিয়েছিল, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা খোলা রাখার কথা। সেই ধারাবাহিকতায় প্রজ্ঞাপনে দেখা যাচ্ছে, এবারও ছাড় দেয়া হলো শিল্প-কারখানাগুলোকে।

তবে সড়ক, নৌ, রেল, অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইট-সব ধরনের পরিবহন বন্ধ থাকবে। পণ্যবাহী যানবাহন ও জরুরি সেবার ক্ষেত্রে কোন বিধিনিষেধ রাখা হয়নি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এসব বিধিনিষেধ জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সেখানে ১৩টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। তবে এই প্রজ্ঞাপনেও লকডাউন বা সাধারণ ছুটি শব্দ ব্যবহার করা হয়নি। যদিও সরকারর বিভিন্ন পর্যায় থেকে লকডাউন শব্দ ব্যবহার করে সেটা কঠোরভাবে কার্যকর করার কথা বলা হয়েছিল। এর আগে গত ৫ এপ্রিল থেকে দেশে চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও তা কার্যকর হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

যেসব ক্ষেত্রে ছাড়

স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্প-কারখানা চালু রাখার কথা যেমন বলা হয়েছে। অন্যদিকে খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁয় দুপুর বারটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত এবং রাতে বারটা থেকে ভোর ছ’টা পর্যন্ত খাবার বিক্রয় এবং সরবরাহ করা যাবে। উন্মুক্ত জায়গায় কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনা বেচা করা যাবে সকাল নয়টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত।

দেশের আদালত বা বিচার কার্যক্রম নিয়ে সুপ্রিমকোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে জুম্মার নামাজ এবং তারাবীর নামাজ হবে। তবে এসব নামাজে জমায়েত কীভাবে করা যাবে-সে ব্যাপারে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্দেশনা জারির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

বোরো ধান কাটার জন্য জরুরি প্রয়োজনে কৃষি শ্রমিক এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারবেন। কৃষি শ্রমিক পরিবহনের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর প্রশাসনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সমন্বয় করার জন্য। বিধি-নিষেধগুলো কার্যকর করতে সারাদেশে জেলা ও মাঠ প্রশাসন পদক্ষেপ নেবে এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের নিয়মিত টহল জোরদার করবে।

বাংলাদেশে গত বছরের ৮ মার্চ করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। তখন টানা দুইমাস পরিবহন, মার্কেট ও অফিস-আদালত বন্ধ থাকে।এই বছরের মার্চ থেকে আবার সংক্রমণ বৃদ্ধির হার বেড়ে যাওয়ায় সরকার এপ্রিলের শুরুতে চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই লকডাউনের সময় বাংলাদেশের সঙ্গে সকল আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে।

সর্বশেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২১, ০০:১৮
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও