প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারো স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন যে, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি না হলে সরকার শিশু ও শিক্ষকদের নিরাপত্তার স্বার্থে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে দেবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা শিশুদের নিয়ে ভাবছি এবং ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে (শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) খোলা হবে, অন্যথায় নয়।
সারা দেশে প্রায় সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫ কোটি নতুন বই বিতরণের উৎসবের উদ্বোধনকালে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বি আইসিসি) মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন হলেও প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে গণভবন থেকে অংশ নেন।
তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা না হলেও আগের মতোই অনলাইনে শিক্ষাদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সরকার প্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি এটা খুব ভাল করেই জানেন যে কোভিড-১৯ এর কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ধারাবাহিকভাবে বন্ধ থাকায় শিশুরা এবং শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
‘কেউই জানে না এই পৃথিবী কখন এই করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পাবে, কবে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। এদিকে আবার করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে,’ বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্য নির্দেশনা বজায় রেখে পর্যায়ক্রমে বই বিতরণ করতে নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশুরা দেশের ভবিষ্যত এবং তারা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে যথাযথ শিক্ষার মাধ্যমে দেশের যোগ্য নাগরিক হয়ে উঠবে।
দেশের প্রতিটি ঘরকে শিক্ষার আলো দিয়ে আলোকিত করে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, শিশুরা যথাযথ জ্ঞান ও শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে বিশ্ব অঙ্গনে দেশের নাম ফুটিয়ে তুলবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘শিক্ষাই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি ছাড়া একটি জাতিকে উন্নত করা যায় না। আমরা বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ, দারিদ্র্যমুক্ত দেখতে চাই। কারণ, আমি জানি শিক্ষিত জাতি ছাড়া জাতিকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করা কখনই সম্ভব হবে না।’
‘একারণেই সরকার শিক্ষার দিকে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে এবং ২০১০ সাল থেকে সরকার শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে পাঠ্য বই বিতরণ করে যাচ্ছে,’ বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, প্রতিবছরের মতো আগামী ১ জানুয়ারি বছরের প্রথম দিনে সারা দেশের সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় পাঁচকোটি বই বিতরণ করা হবে। তবে করোনার কারণে এবার মোট ১২ দিনে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন বই বিতরণ করা হবে।
সর্বশেষ আপডেট: ১ জানুয়ারী ২০২১, ০১:২৭
পাঠকের মন্তব্য