চলমান করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারিতে মানুষের জীবন নিয়ে নির্মম প্রতারণার অভিযোগে ওঠে সরকারের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। করোনা মোকাবেলায় দেশে চিকিৎসা সেবা, মাস্কসহ সুরক্ষা সামগ্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে।
করোনা পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান ও চিকিৎসার নামে তারা হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। চরম দুর্যোগের মধ্যেও স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির চিত্র দেখে মানুষ হতবাক হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার হয় করোনা ডেডিকেটেড বলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তালিকায় থাকা রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ করিম ওরফে সাহেদ, জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রধান ডাক্তার সাবরিনা, তার স্বামী আরিফুর রহমান চৌধুরী ও আওয়ামী লীগ নেত্রী শারমিন জাহানসহ কয়েকডজন। বন্ধ করে দেয়া হয় রিজেন্ট হাসপাতাল, জেকেজি হেলথ কেয়ারসহ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল। অভিযান চালানো হয় সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজসহ কয়েকটি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে।
করোনোয় চিকিৎসায় অনিয়ম খুঁজতে গিয়ে কেচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসার অবস্থা হয়। ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি আবুল কালাম আজাদ। তাকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গ্রেফতার সাহেদ, সাবরিনা, আরিফ, শারমিন জাহানসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে সাহেদ ও সাবরিনার মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। তাদের বিরুদ্ধে আরো কয়েকটি মামলার তদন্ত চলছে। অন্য মামলাগুলো তদন্ত করছে বিভিন্ন সংস্থা।
দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, সুনির্দিষ্ট কোন নীতিমালা অনুসরণ না করে স্বাস্থ্যখাতের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে কেনাকাটা করা হচ্ছে এবং তাতে অনেক জিনিস বাজার মূল্যের কয়েকগুণ বেশি দামে কেনার মতো অনিয়ম হচ্ছে। সংস্থাটি আরও বলেছে, মহামারির সময় পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে স্বাস্থ্যখাতের এক শ্রেণীর কর্মকর্তার সহায়তায় কেনাকাটায় অনিয়ম দুর্নীতি করার চিত্র তাদের গবেষণায় ফুটে উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন বলেছে, দেশে করোনা ভাইরাস শুরুর আগের কয়েকমাসে তারা স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির অভিযোগে ১১টি মামলা করেছে এবং এখন সুরক্ষা সামগ্রীর দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিচ্ছিন্ন দু’একটি ঘটনা ছাড়া স্বাস্থ্য খাতের সব কেনাকাটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে করা হচ্ছে।
দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর পরই গত মার্চ মাসে সরকারের কেন্দ্রীয় ঔষাধাগার থেকে সরবরাহ করা এন-৯৫ মাস্ক এবং পিপিইসহ স্বাস্থ্যকর্মিদের সুরক্ষা সামগ্রীর মান নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছিল। টিআইবির নির্বাহি পরিচালক ড: ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, সুরক্ষা সামগ্রীতেই দুর্নীতি থেমে থাকেনি। চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রেও উদ্বেগজনকহারে দুর্নীতি বৃদ্ধির তথ্য তারা গবেষণায় পেয়েছেন।
আলোচনায় রিজেন্ট-সাহেদ: করোনা পরীক্ষায় প্রতারণার মামলায় বহুল আলোচিত বেসরকারি রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ করিম ওরফে সাহেদ। করোনা পরীক্ষার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। আলোচিত চরিত্র সাহেদের ভয়ঙ্কর প্রতারণার খবরে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও বাংলাদেশ সমালোচিত হয়। আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক উপ-কমিটির সদস্য সাহেদ ছিল ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী বহু নেতার ঘনিষ্ঠ। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার। এমনকি নীতি নির্ধারণী একাধিক বৈঠকেও অংশ নেন তিনি। তবে সেই সাহেদের উত্থানের দায় নিতে নারাজ এখন সবপক্ষই। সাহেদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন তারা। আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য পরিচয়ে বিভিন্ন কূটনৈতিক অনুষ্ঠানের দেখা গেছে সাহেদকে। এমনকি প্রতিবেশি দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাথেও তার সাক্ষাতের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এছাড়াও বর্তমান সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, এমপি এবং প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। সাহেদ করিম প্রতারণার অভিনব সব কৌশল রপ্ত করেছিলেন। তার প্রতারণার লক্ষ্য শুধু ‘টাকা কামানো’। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও কর্মকাণ্ডে তিনি নিজেকে যুক্ত রেখেছিলেন। এসব পরিচয়কে কাজে লাগিয়ে গণমাধ্যমেও তার সরব উপস্থিতি ছিল। তার রাজনৈতিক অভিলাষও ছিল। মধ্যরাতে টেভি টকশোতেও দেখা গেছে এই প্রতারককে।
করোনা চিকিৎসা নিয়ে জালিয়াতি ও প্রতারণায় সাহেদকে গত ১৫ জুলাই ভোর সাড়ে পাঁচটায় সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে র্যাব। বোরকা পরে নৌকায় পালিয়ে যাবার চেষ্টা করেছিলেন বলে র্যাব জানায়। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব জানিয়েছে, ভারতে পালিয়ে যাবার আগ মুহূর্তে কোমড়ে অস্ত্রসহ সাহেদকে আটক করা হয়েছে। আটকের পর তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় এনে র্যাব সদর দপ্তরে নেয়া হয়। এর আগে ঢাকায় আসার পরপরই সদর দপ্তর থেকে তাকে সাথে নিয়ে উত্তরায় তার একটি অফিসে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। সেখানে র্যাব কর্মকর্তারা জানান যে সদর দপ্তরে নেয়ার পর একটি তথ্য পেয়েই উত্তরার অফিসে তাকে নিয়ে এ অভিযান পরিচালনা করেন তারা। বেলা সাড়ে এগারটার দিকে শুরু করে ১২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত সেখানে অভিযান চালানোর পর আবার সাহেদ করিমকে নিজেদের সদর দপ্তরে নিয়ে যায় র্যাব। উদ্ধার করা হয়, অস্ত্র, গুলি, জালটাকা। এর আগে সকালে সাতক্ষীরায় তাকে আটকের পর র্যাব-এর কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেফতার এড়াতে মো. সাহেদ ছদ্মবেশ ধারণ করে। তিনি বলেন, বোরকা পরে একটি নৌকায় উঠার চেষ্টা করছিলেন সাহেদ। তখনই তাকে আটক করা হয়। রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক ও এমডিসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ মামলায় আসামিদের গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব, ডিবি, পুলিশ, সিআইডি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন সাজা: সাহেদ করিমকে অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গত ২৮ সেপ্টেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন ঢাকার মহানগর ১ নম্বর বিশেষ ট্রাইবুনাল। জালিয়াতি ও প্রতরণার অভিযোগে সাহেদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া কয়েক ডজন মামলার মধ্যে উত্তরা পশ্চিম থানার এই অস্ত্র আইনের মামলারই প্রথম রায় ঘোষণা করা হয়। অস্ত্র আইনের ১৯ (এ) ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডই সর্বোচ্চ সাজা। পাশাপাশি আরেকটি ধারায় সাহেদকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে রায়ে। তবে দুই ধারার সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে বলে তার ক্ষেত্রে যাবজ্জীবনই প্রযোজ্য হবে। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, আমাদের এই সমাজে সাহেদের মতো ভদ্রবেশে অনেক লোক রয়েছে, যাদের জন্য এই মামলার রায় একটি বার্তা হিসেবে কাজ করবে। এছাড়াও অর্থ পাচারের অভিযোগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সাহেদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করে। মামলাসূত্রে জানা যায়, সাহেদ ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৪৩টি ব্যাংক হিসাবে ৯১ কোটি ৭০ লাখ টাকা জমা করে ছিল। এর মধ্যে তিনি তুলে নেন ৯০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ঋণের ৮০ লাখ টাকাসহ এ মুহূর্তে তার ব্যাংক হিসাবগুলোয় জমা আছে ২ কোটি ৪ লাখ টাকার মতো। অন্যদিকে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একের পর এক কেলেঙ্কারিতে সমালোচনার মুখে সরে যেতে হয় মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদকে।
জেকেজির প্রতারণা: করোনা মহামারিতে প্রতারণার অভিযোগে উঠে আসে জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা শারমিন চৌধুরী ও তার প্রতারক স্বামী প্রধান নির্বাহী আরিফ চৌধুরীর নাম। প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপারে বিশদ তদন্ত করতে গিয়েই মূলত উঠে আসে তাদের নাম। দুজনেই অবশ্য এখন আইনের আওতায়। কয়েক দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। অন্যদিকে, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জন ডা. সাবরিনাকে বরখাস্ত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পুলিশের তদন্তে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে কোনো পরীক্ষা না করেই প্রতিষ্ঠানটি ১৫ হাজার ৪৬০ জনকে করোনার টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহ করে। একটি ল্যাপটপ থেকে গুলশানে তাদের অফিসের ১৫ তলার ফ্লোর থেকে এই মনগড়া করোনা পরীক্ষার প্রতিবেদন তৈরি করে হাজার হাজার মানুষের মেইলে পাঠায় তারা। জেকেজির কার্যালয় থেকে জব্দ ল্যাপটপ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর করোনা টেস্ট জালিয়াতির এমন চমকপ্রদ তথ্য মিলেছে। এতে দেখা গেছে, টেস্টের জন্য জনপ্রতি নেওয়া হয় সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা। বিদেশি নাগরিকদের কাছে জনপ্রতি একশ’ ডলার। এ হিসাবে করোনার টেস্ট বাণিজ্য করে জেকেজি হাতিয়ে নিয়েছে সাত কোটি ৭০ লাখ টাকা। পুলিশ জানিয়েছে, জেকেজি হেলথকেয়ার থেকে ২৭ হাজার রোগীকে করোনার টেস্টের রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনার আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ রিপোর্ট প্রতিষ্ঠানটির ল্যাপটপে তৈরি করা হয়। জব্দ করা ল্যাপটপে এর প্রমাণ মিলেছে। আরিফ চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানান, জেকেজির ৭-৮ কর্মী ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করেন। গত ২৪ জুন জেকেজির গুলশান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে আরিফসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়। দু’জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জেকেজির কার্যালয় থেকে ল্যাপটপসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মোট চারটি মামলা দায়ের করা হয়। সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তি ছিল জেকেজির। পরে ওই চুক্তি বাতিল করা হয়। এদিকে একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র থাকায় গত ২২ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন তার বিরুদ্ধে মামলা করে। প্রথম জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য গোপন করে দ্বিতীয় এনআইডি করার অভিযোগের মামলায় গত ১৩ ডিসেম্বর জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। তবে এ মামলায় জামিন পেলেও তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা থাকায় জামিনে মুক্ত হচ্ছেন না তিনি।
শারমিনের নকল মাস্ক: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নকল ‘এন-৯৫’ মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেত্রী শারমিন জাহানকে গ্রেফতার করা হয়। গত ২৪ জুলাই দিনগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ থেকে শারমিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিএসএমএমইউয়ের প্রক্টর বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় প্রতারণার মামলা করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মামলায় উল্লেখ করে, নকল মাস্কের কারণে কোভিড-১৯ সম্মুখযোদ্ধাদের জীবন মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে। শারমিন জাহান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। এরপর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক পদে ছিলেন। আওয়ামী লীগের গত কমিটিতে মহিলা ও শিশুবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য ছিলেন। এর আগের কমিটিতে একই উপকমিটির সহসম্পাদক ছিলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষে বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রশাসন-১ শাখায় সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।
মামলায় বিএসএমএমইউয়ের প্রক্টর মো. মোজাফফর আহমেদ বলেছেন, গত ২৭ জুন শারমিন জাহানকে ১১ হাজার মাস্ক সরবরাহের কার্যাদেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। কার্যাদেশের বিপরীতে ৩০ জুন প্রথম দফায় ১ হাজার ৩০০টি; ২ জুলাই দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ৪৬০টি ও ১ হাজারটি এবং ১৩ জুলাই চতুর্থ দফায় ৭০০টি মাস্ক সরবরাহ করে। প্রথম ও দ্বিতীয় লটের মাস্কে কোনো সমস্যা ছিল না। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় লট বিতরণ ও ব্যবহারে ত্রুটি পাওয়া যায় এবং মাস্কের গুণগত মান স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী পাওয়া যায়নি। কোনো মাস্কের বন্ধনী ফিতা ছিঁড়ে গেছে, কোনো মাস্কের ছাপানো লেখায় ত্রুটিপূর্ণ ইংরেজি লেখা পাওয়া গেছে, কোনো কোনো মাস্কের নিরাপত্তা কোড ও লট নম্বর প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে গিয়ে নকল বলে জানা গেছে। এ কারণে কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে যে মাস্কের গুণগত মান নিম্নমানের ছিল। এদিকে নকল ‘এন-৯৫’ মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে আওয়ামী লীগের সাবেক নেত্রী ও অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী শারমিন জাহানের মামলার প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত।
সর্বশেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:১৫
পাঠকের মন্তব্য