ডুমুরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই সহোদরের পরিবারের পাশে মিয়া গোলাম পরওয়ার

মুক্তিবাণী অনলাইন ডেস্ক :

খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগরে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই সহোদরের পরিবারকে সহমর্মিতা জ্ঞাপন, তাদের খোঁজ-খবর নেয়া ও স্বজনদের আর্থিক সহযোগিতা দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। এ সময় তিনি বলেন, ইসলামের সুমহান আদর্শই হচ্ছে বিপন্ন মানুষের পাশে দাড়ানো। মহানবীর এই আদর্শ দেখেই মানুষ ইসলামের অনুসারী হয়েছিলেন। ফলে জামায়াতে ইসলামী সেই আদর্শের সংগ্রাম করে। আর জামায়াত বিশ্বাস করে যে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে  মানব সেবার এই ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ যদি এ দেশে প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে মানুষের দু:খ দুদর্শা দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা কবলিত মানুষ তাদের জীবনেও স্বস্তি ফিরে পায়। তিনি বলেন, এই দুদশাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাড়ানোর দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু সরকার সেই দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করছে না বিধায় আজ জামায়াতে ইসলামীকে এই দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বিপন্ন মানুষের পাশে এসে দাড়াতে হচ্ছে। জামায়াত তার সীমিত সামর্থ নিয়ে সারাদেশেই যারা বিপদগ্রস্ত দুর্যোগ এবং সমস্যাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাড়িয়ে তাদের সাধ্যমত সহানুভুতি জানাবার চেষ্টা করে এটিই ইসলামের আদর্শ। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সংগঠনের পক্ষ থেকে সাধ্যমত সহযোগীতা করা হয়েছে। দেশের মানুষের উচিত এমন একটি সুবিচারপূর্ণ সমাজ এবং সরকার প্রতিষ্ঠা করা, যে সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে পরে সমাজের তান্ত্রিক দুদর্শাগ্রস্ত মানুষ যে কোন আকস্কিক দুর্ঘটনায় পতিত হলে তারা তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বস্তির সাথে বেচে থাকতে পারে সেই আদর্শে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। 

আজ রোববার সকালে ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের রোস্তুমপুর গ্রামে নিহতদের বাড়ীতে ছুটে যান অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি নিহতদের পরিবারের লোকদের প্রতি শোক ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন এবং সান্তনা প্রদান করেন। এ সময় তিনি দুই সহোদরের কবরও যিয়ারত করেন। স্বজনদের সর্বশেষ অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং নিহত দুই সহোদরের শোকাহত পিতা আমজাদ হোসেন শেখের হাতে সংগঠনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা হিসাবে একটি দুধের গাভী ও বাছুর তুলে দেন।

সেক্রেটারি জেনারেল নিহতদের আতœার মাগফিরাত কামনা করে তাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করার জন্য ও তাদের পরিবার-পরিজনদের ধৈর্যধারণ এবং এই শোক কাটিয়ে উঠার তাওফিক কামনা করে পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় বিপুল সংখ্যক লোকদের নিয়ে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে দোয়া করেন। দুর্ঘটনার নিহত দুই সহোদরের আহত মা নাছিমা বেগম (৩১) এর চিকিৎসার খোজখবর নেন। এবং তার দ্রুত সুস্থ্যতার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া করেন।

এ সময় সেক্রেটারি জেনারেল এর সাথে জামায়াতে ইসলামীর খুলনা জেলার সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, ডুমুরিয়া থানা পশ্চিম শাখা জামায়াতের আমীর মাওলানা ইছহাক আলী, নায়েবে আমীর মাওলানা মোকতার হোসেন, সেক্রেটারি মাওলানা ফরহাদ আল মাহমুদ, ইউনিয়ন সভাপতি হাফেজ আবু বকর সিদ্দিক, সহ-সভাপতি হাফেজ মাঈনউদ্দিন, মাওলানা রুহুল আমিন, সেক্রেটারি মাওলানা মতিউর রহমান, জামায়াত নেতা রবিউল ইসলাম বুলু, আব্দুল্লাহ আল কাফি, মাস্টার সাইফুল আজম, ডা. নজরুল ইসলাম, মাওলানা বায়েজিদ হোসাইন, বিএনপি নেতা সরদার আফসার আলী, ছাত্রশিবির নেতা এমরান হোসাইন, মাস্টার আব্দুল কাদের, নিহত দুই সহোদরের চাচা লিয়াকত শেখ, শওকত শেখ, সিরাজুল ইসলাম, মাসুম বিল্লাহ, লুৎফর রহমান মোড়ল, রেজাউল করিম শেখ, আকতারুজ্জামান, মাওলানা ফরহাদ হোসেনসহ স্থানীয় জামায়াত এবং ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ ও নিহতদের আতœীয়-স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে ডুমুরিয়া উপজেলার রোস্তমপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন শেখের ছেলে সাব্বির হোসেন (১৫) ও রাকিবুল হাসান (৫) তার মা নাছিমা বেগম (৩১) কে নিয়ে ভ্যানযোগে চুকনগর বাজারে যায়। ভ্যানে সমস্যা হওয়ায় তারা ভ্যানটি মেরামতের জন্য চুকনগর-যশোর সড়কের পাশের একটি গ্যারেজে নিয়ে যায়। এ সময় যশোর থেকে ছেড়ে আসা চুকনগরগামী যাত্রীবাহী বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গ্যারেজের ভিতর ঢুকে পড়ে। ঘটনাস্থলেই রাকিব মারা যায়। পরবর্তীতে সাব্বিরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য আনা হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। তাদের মা নাছিমা বেগমের পা ভেঙে যায়। বাসটি আটক করতে পারলেও বাসচালক পালিয়ে যায়।

সর্বশেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২০, ১৫:২৭
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও