জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাংচুর ঘটনার প্রতিবাদে আজ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সরকারি কর্মকর্তা ফোরামের উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিএস এডমিনিস্ট্রেটিভ এসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ। ‘জাতির পিতার সম্মান, রাখবো মোরা অম্লান’- এ স্লোগানকে সামনে রেখে সমাবেশে সকল ক্যাডার এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিগণ বক্তব্য রাখেন।
সভাপতির বক্তব্যে ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, জাতির পিতার সম্মান রক্ষায় প্রজাতন্ত্রের ২৯ ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। তিনি বলেন, দেশ ও জাতির উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বাধা প্রদানকারী অপশক্তিকে প্রতিহত করতে আজ যেভাবে আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছি ভবিষ্যতেও তা অটুট থাকবে। বঙ্গবন্ধুর সম্মান রক্ষায় আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় আমরা বাঙালিরা প্রজাতন্ত্রের শতভাগ চাকুরির সুবিধা ভোগ করছি। পাকিস্তান আমলে সরকারি চাকুরিতে বাঙালিরা মাত্র ১৫ শতাংশ এবং পাকিস্তানিরা ৮৫ শতাংশ সুবিধা ভোগ করত।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর কারণে বিশ্ব দরবারে আমরা বাঙালিরা বীর বাঙালির মর্যাদা অর্জন করেছি। তিনি এ সময় ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে সর্বস্তরে চালু করার বিষয়ে সরকারের নিকট আবেদন করা হবে বলে জানান।
বিভিন্ন ক্যাডারে এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য ভাংচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের আহ্বান জানান।
বক্তাগণ তাঁদের বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন সত্তা। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ওপর আক্রমণ এর অর্থ হল বাংলাদেশ রাষ্ট্র, এর সংবিধান, জনগণ এবং মুক্তিযুদ্ধের ওপর আক্রমণ । বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুর ও তাঁর প্রতি অসম্মান প্রদর্শনের প্রতিবাদ করা প্রজাতত্রের প্রতিটি কর্মচারীর নৈতিক ও সাংবিধানিক দায়িত্ব। দৃস্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের এই ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
বক্তাগণ তাঁদের বক্তব্যে বলেন, ভাস্কর্য আর মূর্তি এক জিনিস নয়। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন মুসলিম দেশে ভাস্কর্যের অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে উল্লেখ করে তাঁরা বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ভাস্কর্য ভাঙার মাধ্যমে স্বার্থন্বেষী মহলের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে চায়। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাগণ সকল স্বার্থন্বেষী মহলের এ অশুভ কার্যকলাপ ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিহত করবে।
বক্তাগণ তাঁদের বক্তব্যে আরো বলেন, বাংলাদেশ একটি উদার, অসাম্প্রদায়িক শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে ইতোমধ্যে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত এ দেশকে কোনো মতেই অস্থিতিশীল করতে দেয়া হবে না। সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপুলিশ পরিদর্শক ও বিসিএস পুলিশ এসোসিয়েশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ড. বেনজির আহমেদ, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানম, বিসিএস তথ্য-বেতার কল্যাণ সমিতির সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার (সচিব পদ মর্যাদা) মোঃ নজরুল ইসলাম, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব ও বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের মহাসচিব বিকাশ কুমার সাহা, বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার এসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ আঃ মঃ সেলিম রেজা, বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভাপতি ও অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব সৈয়দ মাসুদ মাহমুদ খন্দকার, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মোঃ গোলাম ফারুক, বিসিএস কৃষি ক্যাডার এসোসিয়েশনের সভাপতি ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, বিসিএস টেলিকম এসোসিয়েশনের সভাপতি ও টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ এ তালেব, বিসিএস সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতির সভাপতি এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মুনির হোসেন পাঠান, গণপূর্ত অধিদপ্তরের সভাপতি প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, বিসিএস ইনফরমেশন এসোসিয়েশনের সভাপতি এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স ম গোলাম কিবরিয়া, বিসিএস (কাস্টমস্ এন্ড ভ্যাট) এসোসিয়েশনের মহাসচিব ও কমিশনার অভ্ কাস্টমস্ সৈয়দ মুশফিকুর রহমান, বিসিএস ট্যাক্সেশন এসোসিয়েশনের মহাসচিব ও যুগ্ম কর কমিশনার মোঃ ফজলে আহাদ কায়ছার, বিসিএস অডিট এন্ড একাউন্টস এসোসিয়েশনের মহাসচিব ও অডিট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গোলাম সারোয়ার ভূঁইয়া, বাংলাদেশ লাইভষ্টক এসোসিয়েশনের সভাপতি ও উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মককর্তা ডাঃ মোঃ ফজলে রাব্বী মন্ডল আতা, বাংলাদেশ ফিশারিজ এসোসিয়েশনের মহাসচিব ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ঢাকা বি এম মোস্তফা কামাল, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান, বিসিএস আনসার অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ও আনসার ও ভিডিপি সদরদপ্তরের উপমহাপরিচালক মোঃ শামসুল আলম, বিসিএস বন সমিতি সাধারণ সম্পাদক ও প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমীর হোসেন চৌধুরী, বিসিএস পোস্টাল ক্যাডার এসোসিয়েশনের সভাপতি ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের জেহসান ইসলাম, বিসিএস রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাডার এসোসিয়েশনের সভাপতি বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার, বিসিএস ফুড ক্যাডার এসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ মুনিরুজ্জামান, বিসিএস সমবায় ক্যাডার এসোসিয়েশনের মহাসচিব সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক মোঃ গালিব খান, বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা এসোসিয়েশনের সভাপতি ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মোজাম্মেল হক, বিসিএস পরিসংখ্যান ক্যাডার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপ-পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ ও বিসিএস ট্রেড ক্যাডার এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মোঃ মাহমুদুল হক।
একই সঙ্গে জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদে সারাদেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাগণ প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
তথ্য সূত্র : ৪৭৯০ / পল্লীকণ্ঠ
সর্বশেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২০, ১৪:০১
পাঠকের মন্তব্য