কতিপয় ধর্ম ব্যবসায়ীদের কাছে ইসলাম ধর্ম লিজ দেয়া হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত কৃতিশিল্পী সম্মাননা ও ‘বাঙালির তীর্থভুমি’ স্মরণিকার প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের মুসলমানেরা কয়েকজন ধর্ম ব্যবসায়ীর কাছে ইসলাম ধর্ম লিজ দেয় নাই। তারাই সব বোঝেন আর কেউ কিছু বোঝেন না। সৌদি আরবে ভাস্কর্য জাদুঘর আছে, রাস্তায় রাস্তায় প্রাণীর এমনকি সৌদি বাদশার মুখাবায়ব সম্পন্ন ভাস্কর্যও আছে। মক্কা শরিফ, মদিনা শরিফের ইমাম সাহেব গ্র্যান্ড মুফতি এ নিয়ে তো কখনো প্রশ্ন তোলেন নাই।’
‘আমাদের দেশের এই ক’জন ধর্ম ব্যবসায়ী তাহলে মক্কা, মদিনার শরিফ ইমামের চেয়েও বেশি জ্ঞানী, ধর্ম নিয়ে বেশি বোঝেন?’ প্রশ্ন রাখেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘আসলে এরা ধর্ম ব্যবসায়ী। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আর এই দেশটি হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে সবার আবাসস্থল হিসেবে স্বাধীন হয়েছে, সুতরাং এখানে ধর্মীয় বিষবাষ্প ছড়ানো সংবিধান লঙ্ঘন, এটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শামিল বলেই এদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অতীতে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে, ২০১৩-১৪-১৫ সালে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, শাপলা চত্বরে কোমলমতি মাদরাসা ছাত্রদের নিয়ে এসে তান্ডব চালিয়ে বায়তুল মোকাররমে এমনকি পবিত্র কোরআন শরিফে আগুন দেয়া হয়েছে এবং এসবে নেতৃত্বদানকারী ও তাদের অনুসারীরা সেই দায় এড়াতে পারেনা।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আবার নতুনভাবে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এই ভূখন্ডে শতশত বৎসর ধরে ভাস্কর্য আছে। মোগল আমল থেকে স্বাধীনতার পর এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে বহুজনের, অনেক রাজনৈতিক নেতারও ভাস্কর্য স্থাপিত হয়েছে। তখন কোনো কথা ছিল না। হঠাৎ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে তারা প্রশ্ন তুললেন। এর বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে ও সারাদেশে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির জন্য সব সাংস্কৃতিক সংগঠনকে আহ্বান জানাই।’
এ সময় আন্তর্জাতিক কুচক্রীমহলের নটী’ হিসেবে বিভিন্ন সময়ে যারা কাজ করে, তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ড. হাছান বলেন, পদ্মা সেতুতে এক টাকাও ছাড় না করেই বিশ্বব্যাংক বলেছিল, পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে, যা পরে সম্পূর্ণ ভ্রান্ত প্রমাণ হয়। কিন্তু সেসময় সিপিডি, টিআইবিসহ কয়েকটি সংগঠন, খ্যাতিমান ক’জন আইনজ্ঞ আর কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও বিশ্ব ব্যাংকের কথায় যেভাবে লাফালাফি শুরু করেছিলেন, যেভাবে বিশ্ব ব্যাংকের চেয়েও বড় গলায় দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করেছেন তা নজিরবিহীন। তখন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, বিশ্ব ব্যাংকের টাকা লাগবে না। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করব। আজ নিজস্ব অর্থায়নে তা প্রায়সম্পন্ন করে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সক্ষমতা পৃথিবীকে জানান দিয়েছেন। আজকে সমগ্র দেশ, দেশের মানুষ উল্লসিত, উচ্ছ্বসিত।
অনুষ্ঠানের আয়োজক বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ফাল্গুনী হামিদের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা কামাল চৌধুরী, মতিন চৌধুরী, সাংবাদিক মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সর্বশেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২০, ২২:৪২
পাঠকের মন্তব্য