প্রমোশনের নিয়ম বাতিল চেয়ে ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

 ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
মুক্তিবাণী অনলাইন ডেস্ক:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর ৭ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের পরবর্তী বর্ষে প্রমোশনের যে নতুন নিয়ম হয়েছে, তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা তাঁদের অভিযোগ, নতুন এই নিয়মে পরীক্ষার খাতার যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়ার ফলে তাঁরা গণহারে অকৃতকার্য হচ্ছেন।

আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা কলেজের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে প্রমোশনের নতুন নিয়মটি বাতিলসহ ছয় দফা দাবি জানান তাঁরা। দাবি মানতে তিন দিনের সময় বেঁধে দেন। এর মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা কলেজের সামনে দুপুরে হওয়া মানববন্ধনটি জাতীয় প্রেসক্লাবে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশের অনুমতি না পেয়ে দুপুরে ঢাকা কলেজের সামনে মানববন্ধনটি করেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন থেকে সাত কলেজের এই শিক্ষার্থীরা মোট ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন।

এগুলো হলো: ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের সিজিপিএ ২/২.২৫/২.৫০ পয়েন্টে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশনের নিয়ম বাতিল করতে হবে এবং সর্বনিম্ন তিন বিষয় পর্যন্ত অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের প্রমোশনের দিতে হবে; স্নাতক ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় বর্ষের মানোন্নয়ন পরীক্ষা এক মাসের মধ্যে নিতে হবে এবং তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা অতি দ্রুত নিয়ে ফল প্রকাশ করতে হবে; ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অতি দ্রুত পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশ করতে হবে; সব বর্ষের ফলাফল সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে, একটি শিক্ষাবর্ষে একাধিক বর্ষের শিক্ষার্থী রাখা যাবে না; ডিগ্রি ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের চলমান বিশেষ পরীক্ষা অতি দ্রুত নিয়ে এক মাসের মধ্যে ফল প্রকাশ করতে হবে এবং সব মানোন্নয়ন পরীক্ষা অতি দ্রুত নিতে হবে ও ডিগ্রি-স্নাতক-স্নাতকোত্তরসহ সব বর্ষের ফলাফলে শিক্ষার্থীদের গণহারে অকৃতকার্য হওয়ার কারণসহ খাতা পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র শাহরিয়ার মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পরীক্ষার ১১ মাস পর আমাদের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এখন জানতে পারছি যে আমরা পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন পাইনি। ফলাফলে গণহারে ফেল এসেছে। ইংরেজি বিভাগে পাসের হার ২১ শতাংশ, অর্থনীতিতে ২৯ শতাংশ, বাংলায় ৩১ শতাংশ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানেও অনেক ফেল। সিজিপিএ–২-এর নিয়মের কারণে পাঁচ বিষয়ে পাস করার পরও আমরা পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন পাচ্ছি না। ফেল আসা বিষয়ে পরের বছর পরীক্ষা দিতে গেলে ৮০০ টাকা লাগে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কি বাণিজ্য খুলে বসেছে?’

শাহরিয়ার আরও বলেন, ‘আমরা নিজ নিজ কলেজের অধ্যক্ষ, বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিন কার্যালয়, উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে এ বিষয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু আমরা কোনো জায়গা থেকেই কোনো সাড়া পাইনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে বলে কলেজে যেতে আর কলেজ থেকে বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাও—আমরা এখন যাব কার কাছে? এখন রাস্তাই আমাদের ঠিকানা।’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর চাপ কমাতে ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর এই কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা প্রথমে উল্লসিত হয়েছিলেন। কিন্তু সেশনজট ও গণহারে অকৃতকার্য হওয়ার কারণে এক বছর না যেতেই সেই উল্লাস ফিকে হয়ে যায়। কয়েক দফায় আন্দোলনেও নামেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

সর্বশেষ আপডেট: ৯ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:২১
মুক্তিবাণী

পাঠকের মন্তব্য

ফেসবুকে

সর্বশেষ আপডেট

ভিডিও