করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে বিশ্বজুড়ে কাড়াকাড়ি শুরু হয়েছে। বিশ্বের মোড়ল রাষ্ট্রগুলো নিজেরাই ভ্যাকসিন উৎপাদন এবং প্রয়োগের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। আজ থেকে শুরু নাগরিকদের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করছে যুক্তরাজ্য।
খুব শিগগিরই ভ্যাকসিন নিজেদের উৎপাদিত ভ্যাকসিন নাগরিকদের দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জার্মানিসহ বড় বড় দেশগুলো। তারা নিজেদের নাগরিকদের সুরক্ষার পাশাপাশি ব্যবসায়িক চিন্তায় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে। বসে নেই প্রথম করোনা ধরা পড়া দেশ চীনও। দেশটি উন্নত দেশের পাশাপাশি মধ্যম ও নিম্নমধ্য আয়ের দেশগুলোর সাধ্যের মধ্যে টিকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সব কিছু মিলিয়ে টিকা নিয়ে কাড়াকাড়ি অবস্থা চলছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশেও বেসরকারি উদ্যোগে টিকা আনার উদ্যোগ নেয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য মার্কিন ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও জার্মান কোম্পানি বায়োএনটেক উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকাকে সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে।
রাশিয়ার মস্কোর কয়েকটি ক্লিনিকে কোভিড-১৯ এর টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। নিজেদের আবিষ্কার ‘স্পুৎনিক-ভি’ টিকা দিয়েই দেশটি তাদের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু করেছে। যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন প্রথমে তাদের টিকা দেওয়া হচ্ছে বলে জানায় বিবিসি। গত অগাস্টে বিশ্বের প্রথম দেশে হিসেবে রাশিয়া তাদের কোভিড-১৯ টিকা সর্বসাধারণের জন্য ব্যবহারের অনুমতি দেয়। স্পুৎনিক-ভি র আবিষ্কারকদের দাবি, এই টিকা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে মানবদেহে অ্যান্টিবডি তৈরিতে ৯৫ শতাংশ কার্যকর এবং গুরুতর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। যদিও বৃহৎ আকারে এই টিকার পরীক্ষা এখনো চলছে।
এই সপ্তাহেই টিকার প্রথম দুইটি ডোজ পাওয়ার জন্য নাম তালিকাভুক্ত করেছেন হাজার হাজার মানুষ। তবে রাশিয়া মোট কতো টিকা তৈরি করতে পারবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। বছরের শেষ নাগাদ টিকাটির উৎপাদকরা ২০ লাখ টিকা তৈরি করতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মস্কো থেকে বিবিসির সংবাদদাতা সারাহ রেইন্সফোর্ড বলছেন, রাশিয়ার সরকার লকডাউনের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বরং দ্রুত কার্যকর টিকা আবিষ্কারের ওপর জোর দিয়েছে।
চলতি মাসের প্রথম পর্বের ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন উদ্ভাবন উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ট্রানজিশন টিমের সঙ্গে তিনি বৈঠকের পরিকল্পনা করছেন।
আজ মঙ্গলবার থেকেই যুক্তরাজ্যে শুরু হচ্ছে ফাইজার-বায়োএনটেক উদ্ভাবিত করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ। তাই পুরো পৃথিবীর নজর এখন ব্রিটেনের দিকে। কারণ বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে নাগরিকদের জন্য করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে যাচ্ছে দেশটি। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষের জীবনে নিয়ে এসেছে স্বস্তির বার্তা। রানি নিজেও ভ্যাকসিন গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন।
ফাইজার ও বায়োএনটেক উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য। উৎপাদকদের দাবি পরীক্ষার চূড়ান্ত ধাপে ভ্যাকসিনটি মানুষকে করোনা সংক্রমণ থেকে ৯৫ শতাংশ রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। ভ্যাকসিনটির ৪ কোটি ডোজের অর্ডার দিয়েছে যুক্তরাজ্য। ইতোমধ্যে ভ্যাকসিনটির প্রথম চালান দেশটিতে পৌঁছে গেছে। হাতে পাওয়ার পর সেগুলোকে একটি অজ্ঞাত স্থানে রাখা হয়েছে। সেখান থেকেই এটি মানুষের ওপর প্রয়োগের জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে বিতরণ করার কথা রয়েছে।
এদিকে, নভেম্বরে চীনের সিনোফার্মের টিকা ব্যবহারের জন্য চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদনের পরপরই এটি বাজারে ছাড়ার কথা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের টিকা স্বাস্থ্যকর্মী ও উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের শরীরে জরুরিভিত্তিতে প্রয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অবশ্য দেশটির ১৪০ কোটির বেশি মানুষের কাছে করোনার টিকা কীভাবে পৌঁছানো হবে, তার কোনও পরিকল্পনা এখনও জানায়নি সরকার।
চীনা কোম্পানি সিনোভ্যাকের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের প্রথম চালান পেয়েছে ইন্দোনেশিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো ভ্যাকসিন পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।
অনলাইন ব্রিফিংয়ে উইদোদো জানান, চীনা কোম্পানি সিনোভ্যাক বায়োটেক লিমিটেডের উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ এর টিকার ১২ লাখ ডোজ তারা গ্রহণ করেছেন। তিনি আরও জানান, আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের শুরুতে আরও ১৮ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। আগস্ট মাস থেকে ইন্দোনেশিয়াতে সিনোভ্যাকের টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। এই টিকা চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষা চলছে ব্রাজিল ও তুরস্কে। ব্রাজিলে পরীক্ষার অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন মধ্য ডিসেম্বরে পাওয়া যেতে পারে। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জানান, ডিসেম্বরেই তারা দেড় কোটি ডোজ টিকা উৎপাদনের কাঁচামাল গ্রহণ করতে পারেন। পরের মাসে তিন কোটি ডোজের সরঞ্জাম পৌঁছাবে।
এদিকে চীনের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, তাদের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই থাকবে। তবে কবে নাগাদ উন্নয়নশীল দেশগুলো সেই টিকা পাচ্ছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বলছে, চীনের বিভিন্ন প্রদেশে নিজেদের তৈরি করোনার টিকা পরীক্ষামূলক প্রয়োগের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। যদিও এ টিকা কার্যকর হবে কিনা, তা নিয়ে দেশটির স্বাস্থ্যকর্মীরাই এখনও অন্ধকারে রয়েছে।
এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতোমধ্যে দেশটি করোনার ৫টি টিকা নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে চারটির পরীক্ষা চলছে রাশিয়া, মিশর, মেক্সিকোসহ ডজনখানেক দেশে, যা তৃতীয় ও শেষ পর্যায়ের ট্রায়েলে রয়েছে। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘকে জানিয়েছেন, তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো টিকা উৎপাদনের চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষার গতি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনা টিকা সফলতা পেলেও তা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ব্যবহারের অনুমোদন প্রক্রিয়া বেশ জটিল হতে পারে।
প্রসঙ্গত, শীতের মৌসুম শুরু হতেই বিশ্বে করোনায় মৃত্যু আবার বাড়তে শুরু করেছে। গত একদিনে করোনায় ৭ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ৬ কোটি ৭৩ লাখ এবং মৃত্যু ১৫ লাখ ৪১ হাজার ছাড়িয়েছে। সুস্থ হওয়ার সংখ্যা ৪ কোটি ৬৫ লাখ। একদিনে করোনায় নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ৫৩৪ জনের এবং একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ। নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ।
করোনা নিয়ে আপডেট দেয়া ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, সোমবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ কোটি ৭৩ লাখ ৮৫ হাজার ২৮৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৫ লাখ ৪১ হাজার ৬৩৮ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৪ কোটি ৬৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৯৭ জন।
এদিকে করোনার টিকা সংগ্রহে বিশ্বজুড়ে চলছে কাড়াকাড়ি। জাপান বৃহৎ ওষুধ কোম্পানি ফাইজারের কাছ থেকে ৬ কোটি মানুষের জন্য কোভিড-১৯ টিকা নিশ্চিত করেছে। এছাড়া, তারা বায়োটেক কোম্পানি মডার্নার নিকট থেকে আরও ২ কোটি ৫০ মানুষের জন্য করোনা টিকা কিনছে। জাপান সরকার জানিয়েছে, তারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার ১২ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কিনবে।
যুক্তরাজ্যের পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে ফাইজার-বায়োএনটেকের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ বাহরাইন। শুক্রবার দেশটির স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ এই অনুমোদন দেয়। করোনায় আক্রান্তদের জরুরি চিকিৎসার জন্য এ অনুমোদন দিয়েছে দেশটি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এখবর জানিয়েছে।
ভিয়েতনাম রাশিয়ার কোভিড-১৯ টিকা কিনতে নাম নিবন্ধন করেছে বলে জানিয়েছে কমিউনিস্ট পার্টিশাসিত দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনামে টানা কয়েকমাস স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত কোনো রোগী পাওয়া না গেলেও সম্প্রতি সেখানে নতুন করে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে দেশটি রাশিয়ার টিকার দিকে ঝুঁকেছে বলে ভিয়েতনাম টেলিভিশনের (ভিটিভি) প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। “এর মধ্যে ভিয়েতনাম নিজস্ব কোভিড-১৯ টিকা উদ্ভাবনেও কাজ চালিয়ে যাবে,” দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলেছে ভিটিভি। গত সপ্তাহে রাশিয়া তাদের গামালিয়া ইনস্টিটিউটের কোভিড-১৯ টিকাকে জনসাধারণের মধ্যে প্রয়োগে চূড়ান্ত অনুমতি দিয়েছে। মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনাভাইরাস মোকাবেলায় টিকাটি ‘যথেষ্ট কার্যকর’ বলেও দাবি করছে তারা।
তবে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপর পরীক্ষা চালানো ছাড়া অনুমোদিত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের গবেষকরা এ রুশ টিকাটির কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ ও সন্দেহ থাকলেও ২০টির মতো দেশ এরই মধ্যে রাশিয়ার টিকা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে মস্কো। ভিয়েতনামও টিকাটির ৫-১৫ কোটি ডোজ পেতে চুক্তি করেছে, জানিয়েছে তুওই ত্রে পত্রিকা। এর মধ্যে কিছু টিকা রাশিয়া ‘অনুদান’ হিসেবে দেবে, বাকিগুলোর দাম দেবে ভিয়েতনাম, বলেছে তারা। কবে নাগাদ এ টিকা পাওয়া যাবে এবং টিকার জন্য কত খরচ হয়েছে সে বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হয়নি ভিয়েতনামের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে ভারতে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন চেয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার ভারতে তাদের টিকার জরুরি অনুমোদন চাওয়ার একদিনের মাথায় টিকার অনুমোদন চাইল সিরাম। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, করোনা মহামারিতে চিকিৎসাসেবায় জরুরি ব্যবহার এবং টিকার প্রতি মানুষের ব্যাপক আগ্রহের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ মহাপরিচালক (ডিজিসিআই) বরাবর জরুরি অনুমোদনের আবদেন করেছে সিরাম। ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে অনুমোদন চেয়ে ফাইজারই প্রথম এ ধরনের আবেদন করে।
ফাইজারের করোনার টিকা বেসরকারিভাবে দেশে আমদানির উদ্যোগ শুরু হয়েছে। ফাইজারের পণ্য আমদানি ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান এ উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, সব শর্ত মেনে টিকা আনলে সরকার অনুমতি দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজারের পণ্য এ দেশে আমদানি ও সরবরাহ করে একাধিক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে জনতা ট্রেডার্স ও রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস অন্যতম। এদিকে ফাইজারের টিকার জন্য মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন। এমন তীব্র নিম্ন তাপমাত্রায় টিকা রাখার ব্যবস্থা বাংলাদেশে নেই। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘যেকোনো ওষুধ ও টিকার মতো করোনার টিকা আমদানি এবং এ দেশে ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট কাগজপত্র জমা দিতে হবে। আবেদনসহ কাগজপত্র পেলে দ্রততার সঙ্গে অনুমোদন দেয়া হবে।’
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও ওষুধশিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, টিকা আমদানি ও অনুমোদনের জন্য টিকার সফল পরীক্ষার ফলাফলের সারসংক্ষেপ, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যকর ও নিরাপদবিষয়ক সনদ, নির্দিষ্ট পরিমাণ উৎপাদনের (লট) সনদ ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে জমা দিতে হবে।
জার্মানির গবেষণা প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেক এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজারের যৌথ উদ্যোগে উদ্ভাবিত টিকার কার্যকর ও নিরাপদ বলে অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। শিগগির যুক্তরাজ্যে এ টিকার ব্যাপক প্রয়োগ শুরু হবে বলে দেশটির সরকার ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাজ্যে টিকার অনুমোদনের সঙ্গে সঙ্গে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের মানুষের মনেও প্রশ্ন জেগেছে, কবে নাগাদ এ টিকা পাওয়া যাবে।
জনতা ট্রেডার্সের মহাব্যবস্থাপক এ কে এম রাজিবুর রহমান জানান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ভারতের বাজারের জন্য ফাইজারের আঞ্চলিক কার্যালয় ভারতে। ওই কার্যালয়ের সঙ্গে প্রতিদিন তাঁদের যোগাযোগ হচ্ছে। পরীক্ষামূলক প্রয়োগসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভারতের কার্যালয়ে আসার পরপরই তা বাংলাদেশে অনুমোদন নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে জনতা ট্রেডার্স। তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) সভায় ফাইজারসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের টিকা অনুমোদনের সম্ভাবনা আছে। ওই সভার পরই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়া যেতে পারে।
ফাইজারের টিকার জন্য মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন। এমন তীব্র নিম্ন তাপমাত্রায় টিকা রাখার ব্যবস্থা বাংলাদেশে নেই। এ ব্যাপারে এ কে এম রাজিবুর রহমান বলেন, ‘৬০ থেকে ৮০ ডিগ্রি ঋণাত্মক তাপমাত্রা ধরে রাখতে সক্ষম এমন দুটি “কোল্ড চেম্বার” বিদেশ থেকে আনার উদ্যোগ নিয়েছি। একেকটি চেম্বারে ৮০ হাজার টিকা রাখা সম্ভব।’ টিকার দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একেকটি টিকার দাম ১ হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা পড়তে পারে।
সর্বশেষ আপডেট: ৮ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:৫০
পাঠকের মন্তব্য